সূরা আল বাকারা শেষ দুই আয়াত বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ | Surah Al Baqarah

0

 


সূরা আল বাকারা শেষ দুই আয়াত: সূরা আল বাকারা হলো পবিত্র কুরআন শরীফের দ্বিতীয় সূরা। এই সূরার আয়াত সংখ্যা ২৮৬। মদিনায় অবতীর্ণ হওয়া এই সূরায় শেষ দুই আয়াতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া রয়েছে। চলুন আমরা এই আয়াতগুলোর বাংলা অনুবাদ এবং উচ্চারণ জানি।


সূরা আল বাকারা শেষ দুই আয়াত বাংলা উচ্চারণ  বাংলা অর্থ

সূরা আল বাকারার শেষ দুই আয়াত হল আয়াত সংখ্যা ২৮৫ -২৮৬। নিয়ে দুই আয়াতের বাংলা উচ্চারণ দেওয়া হল। 

আয়াত ২৮৫ঃ -মানাররাছূলু বিমা-উনঝিলা ইলাইহি মির রাব্বিহী ওয়াল মুমিনূনা কুল্লুন -মানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুছুলিহী লা-নুফাররিকুবাইনা হাদিম মির রুছুলিহী ওয়া কা-লূ ছামিনা ওয়াআতানা গুফরা-নাকা রাব্বানা-ওয়া ইলাইকাল মাসীর।

আয়াত ২৮৬ঃ লা-ইউকালিলফুল্লা-হু নাফছান ইল্লা-উছআহা-লাহা-মা কাছাবাত ওয়াআলাইহা-মাকতাছাবাত রাব্বানা-লা-তুআ-খিযনা- ইন নাছীনা-আও আখতানা-রাব্বানা ওয়ালা-তাহমিলআলাইনা-ইসরান কামা-হামালতাহূ আলাল্লাযীনা মিন কাবলিনা-রাব্বানা-ওয়ালা তুহাম্মিলনা-মা-লা-তা-কাতা লানা-বিহী ওয়াফুআন্না-ওয়াগফিরলানা-ওয়ারহামনা-আনতা মাওলা-না-ফানসুরনা-‘আলাল কাওমিল কা-ফিরীন।


সূরা আল বাকারা শেষ দুই আয়াত আরবিতে

آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللّهِ وَمَلآئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ وَقَالُواْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ

উচ্চারণঃ -মানাররাছূলু বিমা-উনঝিলা ইলাইহি মির রাব্বিহী ওয়াল মুমিনূনা কুল্লুন -মানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুছুলিহী লা-নুফাররিকুবাইনা হাদিম মির রুছুলিহী ওয়া কা-লূ ছামিনা ওয়াআতানা গুফরা-নাকা রাব্বানা-ওয়া ইলাইকাল মাসীর।

অর্থঃ রসূল বিশ্বাস রাখেন সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

 

اَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

উচ্চারণঃ লা-ইউকালিলফুল্লা-হু নাফছান ইল্লা-উছআহা-লাহা-মা কাছাবাত ওয়াআলাইহা-মাকতাছাবাত রাব্বানা-লা-তুআ-খিযনা- ইন নাছীনা-আও আখতানা-রাব্বানা ওয়ালা-তাহমিলআলাইনা-ইসরান কামা-হামালতাহূ আলাল্লাযীনা মিন কাবলিনা-রাব্বানা-ওয়ালা তুহাম্মিলনা-মা-লা-তা-কাতা লানা-বিহী ওয়াফুআন্না-ওয়াগফিরলানা-ওয়ারহামনা-আনতা মাওলা-না-ফানসুরনা-‘আলাল কাওমিল কা-ফিরীন।

অর্থঃ আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।

নিচে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের আরবি বাংলা উচ্চারণের ছবি দেওয়া হল। আপনারা ছবিটি মোবাইলে ডাউনলোড করে নিয়ে পারেন।👇



সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াতে রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও তাৎপর্য

আবু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতের বেলা আয়াত দুটি তিলাওয়াত করবে, তার জন্য আয়াত দুটোই যথেষ্ট। অর্থাৎ রাতে কোরআন মজিদ তিলাওয়াত করার যে হক রয়েছে, কমপক্ষে সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত তিলাওয়াত করলে তার জন্য তা যথেষ্ট। (বুখারি: ৪০০৮)

জুবাইর ইবনু নুফাইর (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সুরা আল-বাকারাকে আল্লাহ তাআলা এমন দুটি আয়াত দ্বারা শেষ করেছেন, যা আমাকে আল্লাহর আরশের নিচের ভান্ডার থেকে দান করা হয়েছে। তাই তোমরা আয়াতগুলো শিখবে। তোমাদের স্ত্রীদেরও শেখাবে। কারণ আয়াতগুলো হচ্ছে রহমত, (আল্লাহর) নৈকট্য লাভের উপায় (দীন দুনিয়ার সকল) কল্যাণলাভের দোয়া। [মিশকাতুল মাসাবিহ: ২১৭৩]

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যখন আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তিনটি জিনিস দান করা হয়। . পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, . সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, . উম্মতের মধ্যে যারা শিরক করে না, তাদের কবিরা গুনাহ মাফ হওয়ার সুসংবাদ। [মুসলিম, তাফসিরে মাজহারি]

 

হজরত আলী (রা.) বলেছেন, ‘আমার মতে যার সামান্য বুদ্ধিজ্ঞান আছে, সে দুটি আয়াত পাঠ করা ছাড়া নিদ্রা যাবে না।

 

আয়াত দুটো নিয়মিত পড়লে বিপদ-আপদ দূরে থাকে, জান্নাতের পথও সুগম হয়।


প্রিয় পাঠকগণ,
সূরা আল বাকারার (সূরা বাকারাহ) এর শেষ দুটি আয়াতের গুরুত্ব এবং ফজিলত অনেক। ছোট দুটি আয়াত পড়তে তিন মিনিটের বেশি সময় লাগে না। আসুন ফজিলতপূর্ণ দুটি আয়াত আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের রুটিন করে ফেলি। চেষ্টা করি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে সূরা আল বাকারার শেষ দুই (২৮৫-২৮৬) আয়াত পড়ি। লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন।


Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)